আয়ু কি বাড়ানো যায়?



- হাকীম সাইয়েদ মোঃআকবর হোসাইন (স্বপন)


পৃথিবী যত এগিয়ে যাচ্ছে, মানুষের আয়ু ততই কমে যাচ্ছে।সময়ও সংক্ষিপ্ত হয়ে আসছে।এক বছরকে মনে হয় এক মাস।এক মাসকে মনে হয় এক দিন।এক দিনকে মনে হয় এক ঘন্টা।বাস্তবে তা ঘঠে চলেছে।এটি কোন কাল্পনিক বিষয় নয়, নয় কোন রোমান্টিকিজম, এটি আজ চরম বাস্তবতা।
মহা গ্রন্থ আল-কোরআনে “আল্লাহ বলেছেন, পৃথিবীর শেষ সময়ে আমি সময়কে সন্কুচিত করে দেব।জমিনকে ও করে দিব পরস্পরের কাছাকাছি।মানুষের হায়াতও সন্কুচিত হয়ে আসবে।যুবকও হয়ে যাবে সময়ের আগে বৃদ্ধ।
মূলত মানুষের আয়ু কখনোই কমে না, বাড়েও না।একটি নির্দিস্ট সময় নিয়ে প্রতিটি মানুষকেই পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছে।মানুষ শুধু মাত্র নির্দিস্ট সময় পর্যন্ত সকল জড়া-ব্যাধিকে দমিয়ে রাখতে চেস্টা অব্যাহত রেখে যাবে।এতে সে সফলও হবে।
বাস্তবেও আধুনিক প্রযুক্তি ও ঔষুধ গবেষণা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে।কিন্ত তা মাত্র৫% লোকের জন্য সহজ লভ্য হবে।একই সাথে পুরুষের পজিটিভ শুক্রানুও কমে যাবে।নারী শিশু বাড়তে থাকবে।বর্তমানে পূথিবীতে ১০ কোটির উপরে নারী বেশি রয়েছে, এটি ক্রমশ বাড়তেই থাকবে।
এমতাবস্থায় আয়ুকে শক্তিশালী করা আজ একটি কমন বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে।এই বিষয়ে আমার নিজস্ব চিন্তাধারা ভিন্নরুপঃআমার মতে সাধারনত ৫ টি কারনে মানুষ দ্রুত বুড়িয়ে যায়।যেমন: ১।জন্মগত সমস্যা ২।পুস্টির অভাব ৩।পরিবেশগত সমস্যা ৪।জীবন-জিবীকা ৫।গোপনপাপ।
১।জন্মগত সমস্য:মাতৃত্বকালীন সময়ে মায়ের যদি পুস্টির অভাব ঘঠে থাকে, অথবা মায়ের জীবন যাত্রায় ত্রুটি অব্যাহত থাকে, তাহলে গর্ভাস্থায় সন্তান বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে জন্ম নিয়ে থাকে।পরবর্তীতে এ সব সন্তান দ্রুত বুড়িয়ে যায়।এদের রোগ প্রতি রোধ ক্ষমতা কম থাকে।তাই গর্ভাস্থায় মাকে পর্য্যাপ্ত কেয়ারে রাখা খুবই জুরুরী।তৃতীয় বিশ্বে এটি ভয়াবহ রুপ নিয়েছে।আন্তজাতীক রাজনিতী এর জন্য অন্যতম দায়ী।
২।পুস্টির অভাব: একটি সন্তান সুস্থ্য সবল ভাবে জন্ম নেওয়ার পরে ও তার জীবন-যাত্রায়,লালন-পালনে সুষম খাদ্যের অভাব ঘঠে থাকলে, সে ক্ষেত্রে ও সন্তান দ্রুত বুড়িয়ে যায়।পুস্টিবিজ্ঞান আজ একটি মাস্টার্স সাবজেক্ট।এই বিষয়ে ও পিএইচডি ড্রিগ্রি রয়েছে।এক্ষেত্রেও বিশ্ব অনেক পিছিয়ে রয়েছে।যেখানে৭৫% মানুষ পুস্টি বিষয়ে অবচেতন মনে সচেতন হলে ও দারিদ্রতার কারনে তা অবহেলিত।তার উপরে রয়েছে প্রতিটি পুস্টি পণ্যতে বিষের মিশ্রন।যা জীবনকে সংকুচিত করার ক্ষেত্রে অগ্রনী ভূমিকা রেখে চলেছে।এক্ষেত্রে ও রাজনৈতিক শক্তির সদিচ্ছার প্রয়োজনিয়তা ওতপ্রোত ভাবে জড়িত।
৩।পরিবেশগত সমস্যা:অতিরিক্ত ধুলাবালি, ধোঁয়া, কার্বন মনোক্সাসাইড, সিসা, পানিতে বিষের উপাদান, দুষিতপানি, গাছপালা কমে যাওয়া, গিন্জি পরিবেশ, দূর্গন্ধ, ময়লা আর্বজনা জমে থাকা, বিভিন্ন খাদ্য দ্রব্যয় বিষাক্ত উপাদানের মিশ্রন, ঘন-বসতি, পয়ো-নিস্কাশনের জটিলতা, অতিরিক্ত যান্ত্রিক রেডিয়েশন, আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর জীবন সহ হাজারো নানা কারনে আজ আমরা পরিবেশ গত দূষনের স্বিকার।যা জীবনকে সন্কুচিত করার জন্য অন্যতম ভূমিকা রেখে চলেছে।এটি ও ৩য় বিশ্বে ভয়াবহ রুপ নিয়েছে।
৪।জীবন-জিবীকা :বেঁচে থাকার জন্য আমাদের কে কোন না কোন কর্ম করে খেতে হয়।ভূল কর্মজীবন মানুষকে দ্রুত বুড়িয়ে তোলে।জীবন চলার পথে বেশির ভাগ মানুষকে দেখেছি, লেখাপড়া করেছে এক বিষয়ে, কর্মজীবন সম্পূর্ন অন্য বিষয়ে।মনের প্রচন্ড অনিহার বিরুদ্ধে কর্ম করে যেতেই হয়।যা জীবনকে দ্রুত শেষ করে দেওয়ার জন্য দায়ী।এটি আজ সারা পূথিবীতেই ক্রমশ বাড়ছে।এর জন্য সঠিক রাস্ট্রীয় নেতূত্বের গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রয়েছে, কারণ রাস্ট্ররই দায়িত্ব কর্ম সূস্টি করা।
৫।গোপনপাপ : এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ন।এটি সম্পূর্ন নিজের ইচ্ছা শক্তির উপরে নির্ভর করে।পাঁছটি বিষয়ের মধ্যে আমার কাছে এই বিষয়টি অধিক ভূমিকা রাখে বলে প্রতীয়মান।ধর্মীয় জীবন-যাপনের বিপরীতে গোপনপাপ সমুহ মানুষকে দুভাবে শেষ করে দেয়।এক দিকে তার ভিতরে আল্লাহর ভয় থাকেনা, অপর দিকে অতিরিক্ত অনৈতিক কর্মকান্ড জীবনি শক্তির উপর ও দারুন প্রভাব ফেলে।শরীরের জন্য যেমন খাদ্য রয়েছে,তেমনি আত্নার জন্যওখাদ্য রয়েছে।বস্তুবাদী দুনিয়া রুহকে দেহের একটি অংশ মনে করে।এটি শতভাগ ভুল, মূলত দেহ হল রুহ্ এর একটি বাহন বাঘোড়া।যখন আপনি মারাযান, তখন বলা হয়, এটা স্বপনের লাশ, তাহলে স্বপন কোথায়……? স্বপন হল তার রুহ্বা জীবনি শক্তি।এই রুহ্কোন ভাত মাছ খায় না।ঘোড়াকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য খাদ্য দিতে হয়, তেমনি রুহকে তার নির্দিস্ট খাদ্য না দিলে সে ও ধীরে ধীরে দূর্বল হয়ে ব্যাধিতে রুপান্তরিত হয়।আর এই খাদ্য হল ধর্মীয় জীবন-যাপন সঠিক ভাবে পালন করা।তবে এটি সকল ধর্মের ক্ষেত্রে ঠিক মত প্রযোজ্য হয় না।পূথিবীর বুকে ইসলাম ধর্মেই এর পরিপূর্ন বিকাশ রয়েছে বলে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের মতামত।কারণ ইসলামেই একমাত্র পরিপূর্ন জীবন বিধান রয়েছে।বাকি ধর্ম গুলো শুধুমাত্র ধর্মীয় আচার কানূন সমুহ জীবন ধারা।কখনই এক বিন্দু হতে দুটি সরল রেখা টানা যায় না।সরল পথ কখনো দুটি হতে পারে না।
যখনই মানুষ ধর্মীয় জীবন হতে সরে গিয়ে দুনিয়ার পূঁজারী হয়ে উঠে, ঠিক তখনি তার ভিতরে বিভিন্ন পাপ জন্ম নিতে থাকে।মিথ্যা বলা, সুদ খাওয়া, ঘুষ খাওয়া, চুরি করা, খুন করা, যেনা-ব্যাভিচার করা সবই তার জন্য সহজ হয়ে উঠে।একই ভাবে এর বিপরীতে ভাল কাজ করা তার জন্য তত টাই কঠিন হয়ে যায়।
যখন রুহ্দূর্বল হতে থাকে, ঠি কতখনি বিভিন্ন জড়া-ব্যাধি তার শরীরে বাসাবাধতে থাকে।কারণ রুহ্ একটি আলোক শক্তি, যা শরীরের প্রতিটি কোষেবিদুৎ প্রবাহকে ঠিক রাখে।এই প্রবাহ যখন ধীরে ধীরে কমে যায়, তখন কোষের মধ্যে ক্যান্সার, টিউমার, ব্লক সহ নানান প্রানঘাতী রোগ সহজেই বাসাবাধে।পরিশেষে সে দ্রুত বুড়িয়ে যেতে থাকে।
শুধুমাত্র সঠিক ধর্মীয় জীবন-যাপনপালন করেই মিত্যুর আগ পর্যন্ত সুস্থ্য থাকা যায়।এটি আমার পরবর্তী আটিকেলে আমি বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমান করে দেখাব।এখন আপনাকে “সঠিক ধর্মীয় জীবন-যাপন এই শব্দটি কে গুরুত্ব দিতে হবে।আমরা যারা মুসলমান আছি, তারা প্রকূত অর্থে মুসলমান নই।দিপামনির ভাষায় গরু মুচলমান।


আপনি যদি মিত্যুর আগ পর্যন্ত সুস্থ্য থাকতে চান, তাহলে উপরে উল্লেখিত ৫টি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েই আপনাকে পালন করে যেতে হবে।এর মধ্যে ৫নং কে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিতে হবে।আর এ জন্য আপনার একার পক্ষে তা সম্ভব নয়।এর জন্য দরকার রাজনৈতিক শক্তির।আর সেটি বর্তমান রাজনৈতিক সিস্টেম দ্বারাসম্ভব নয়।দরকার একটি পরিপূর্ন আদর্শ শক্তির সরকার।মাননীয় প্রধান মন্ত্রি দেশকে সে দিকে নিয়ে যাবেন,সেটাই আমাদের প্রত্যাশা………।
আসুন, আমরা মানবতার জন্য, নিজের জন্য, সুস্থ্য ভাবে বেঁচে থাকার লক্ষ্যে সর্বোপরি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কল্যাণের পতাকা তলে একত্রিত হই।
আপনাদের সকল কে ধন্যবাদ।

Comments

Popular posts from this blog

ভেষজ চিকিৎসাই আগামীর চিকিৎসা

ভেষজ চিকিৎসার প্রসারে সম্মত ভারত-বাংলাদেশ - বিবিসি প্রতিবেদন